নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশে উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়ছে ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) খাতে। ২০০৬ সালে এ খাতে রপ্তানি ছিলো ২১ মিলিয়ন ডলার যা ২০২৩ সালের জুলাইতে এসে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে সফটওয়্যার খাতের ওয়েবসাইট তৈরি ও ডিজাইন, মোবাইল অ্যাপস, গেমস, অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্ম, ভিওআইপি অ্যাপ্লিকেশন, ডেটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রি-প্রেস, ডিজিটাল ডিজাইন, সাপোর্ট সেবা, কাস্টমাইজড অ্যাপ্লিকেশন রপ্তানি বেড়েছে।
দেশের ৭৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী এখন ইন্টারনেটে সংযুক্ত। ইন্টারনেট ব্যবহারের সহজলভ্যতা ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পাওয়ায় এ খাতে রপ্তানি আয় দ্রুত বাড়ছে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা শহিদুল আলম মজুমদার চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘গত কয়েক মাস আগেও এ খাতে রপ্তানী আয় ছিলো ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এ খাতে মজুরি কম হওয়ার কারণে বৈশি^ক সংস্থাগুলো থেকে বেশি সাড়া পাচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে রপ্তানিও বাড়ছে।’
তবে এ খাতে রপ্তানি বাড়াতে আরো কার্যকর ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে আইসিটি খাতের রপ্তানী আয় আরো কয়েক বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করার সুযোগ রয়েছে। কারণ ভবিষ্যতে সারাবিশে^র মধ্যে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল হবে এ খাত থেকে আমদানির শীর্ষ বাজার।
বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে ২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিলো ১ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে আইসিটি খাতে ৪৫২ কোটি টাকার বরাদ্দ বেশি রাখা হচ্ছে। তবে এই বরাদ্দ থেকে একটি বড় অংশ বিনিয়োগ হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা খাতে এবং স্মার্ট গভর্মেন্ট বিনির্মাণে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর লিভারেজিং আইসিটি (এলআইসিটি) প্রকল্পের তথ্যমতে, বাংলাদেশ থেকে ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ২৮ লাখ (২ দশমিক ৮ মিলিয়ন) ডলারের সফটওয়্যার রপ্তানি হয়। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সফটওয়্যার রপ্তানি শুরু করে।
সফটওয়্যার ও তথ্য-প্রযুক্তি পরিষেবা রপ্তানিকে উৎসাহ দিতে এ খাতের রপ্তানি আয়ের ওপরে আর্থিক প্রণোদনা ১০ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার পরামর্শ দিচ্ছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। দেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে উৎসাহ প্রদানের জন্য দেশীয় সফটওয়্যার ক্রয়ে বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা চালু করার বিষয়েও জোর দিচ্ছেন তারা। এছাড়া এ খাতের রপ্তানী আয় আরো বাড়াতে এ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল তৈরির সুচিন্তিত ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, মেইড ইন বাংলাদেশ-আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি স্ট্র্যাজেডি ২০২২ অনুযায়ী স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী সুনির্দিষ্ট ৬৭ পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এর সফল বাস্তবায়নে এ খাতের প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হবে।
Leave a Reply